বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ফুটেজকে ‘হিন্দু হত্যাকাণ্ড’ বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। তবে এএফপির ফ্যাক্ট চেকিং সাইট বলছে, অনলাইনে শেয়ার করা সহিংস সংঘর্ষের ফুটেজে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে হিন্দু শিক্ষার্থীদের নিহত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি, যেমনটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দাবি করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছে। পুলিশের একজন মুখপাত্র এবং যে বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল সেখানকার অধ্যক্ষ এএফপিকে বলেছেন, ঘটনাটির সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই।
৮ ডিসেম্বর ভিডিওটি শেয়ার করা একটি এক্স পোস্টে লেখা হয়েছে, শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ, ঢাকা, বাংলাদেশ। হিন্দু ছাত্রদের চিহ্নিত করা হয়েছে, আলাদা করা হয়েছে এবং হত্যা করা হয়েছে।
ফুটেজে দেখা যায়, ঢাকার একটি স্কুল ‘ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ’ নামের একটি ভবনের কাছে জনতা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালাচ্ছে। একই ধরনের ভিডিওটি এক্স পোস্টে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানেও দাবি করা হয়, বাংলাদেশে একজন হিন্দু ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে।
গুগলে ভিডিওটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ২৫ নভেম্বর একটি বাংলাদেশি সংবাদপত্রের ইউটিউবে পোস্ট করা একটি দীর্ঘ সংস্করণ পাওয়া যায়। ভিডিওটির শিরোনাম ‘মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সঙ্গে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষ’।
বাংলাদেশের আরেকটি পত্রিকা ২৫ নভেম্বর সংঘর্ষের একটি সরাসরি সম্প্রচার করে, যেখানে একজন সাংবাদিক ব্যাখ্যা করেছেন, ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ছাত্ররা কবি নজরুল ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে তাদের ক্যাম্পাসে আগত ছাত্রদের ওপর আক্রমণ শুরু করে।
অবহেলাজনিত কারণে হাসপাতালে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের এক ছাত্রের মৃত্যুর পর বিক্ষোভ থেকে যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল, তার মধ্যে এটি সর্বশেষ ঘটনা এটি।
ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুল্লাহ নয়ন ২৩ জানুয়ারি এএফপিকে বলেন, দুটি কলেজের শিক্ষার্থীরা আমাদের ক্যাম্পাসে হামলা চালায়। আহতদের মধ্যে কোনো হিন্দু শিক্ষার্থী ছিল না এবং হিন্দু ছাত্রদের লক্ষ্য করে কোনো হামলা ছিল না।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলিশের মুখপাত্র ফারুক আহম্মদ বলেন, সংঘর্ষের সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো সম্পর্ক নেই।
