চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কিরণগঞ্জ সীমান্তে দুই দেশের স্থানীয় নাগরিকদের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুরুতে কিরণগঞ্জ সীমান্তে এর সূত্রপাত হলেও বেলা ৩ টার দিকে তা চৌকা সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এটি বিস্তার লাভ করে। এরপর প্রায় ৫ ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে সংঘর্ষ থামলেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করেছে
১৮ জানুয়ারি (শনিবার) বেলা ১১ টার দিকে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক আহত হয়েছেন। তবে আহতের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।
বিনোদপুর ইউনিয়নের কিরণগঞ্জ সীমান্তের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, সকালে বিএসএফ সীমান্তে এসে বাংলাদেশের নাগরিকদের আমের গাছ কাটা শুরু করে। পরে বাংলাদেশিরা গিয়ে প্রতিবাদ জানায়। এরপর ভারতের কয়েকশো লোকজন হাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে ধাওয়া করে। শুরু হয় ইটপাটকেল নিক্ষেপ। মাঝে মাঝে বিএসএফ কাঁদানে গ্যাস ও ককটেল ছুড়ে মারতেছে আমাদের দিকে।
বিনোদপুর ইউনিয়নের বিনোদপুর মালোপারা গ্রামের বাসিন্দা মশিউর রহমান বলেন, আমি নিজেও ভারতীয়দের ছোড়া পাথরের ঢিল খেয়েছি। পিঠে লেগে ফুলে গেছে। প্রতিবেশী সিরাজুলের পুত্র ফারুকের (৩২) একটি চোখে পাথর লেগেছে। ওর এক চোখ নষ্ট হতে পারে। আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে যাদের নাম জানি না। বাংলাদেশের সীমান্তে বিপুল পরিমাণ ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ওরা (ভারতীয় নাগরিকেরা) আমাদের সীমানার ভেতরে ঢুকে আমাদের দিকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করে। আমরাও ধাওয়া দেই। খবর পেয়ে আশেপাশের এলাকা থেকে লোকজন আসা শুরু করে। বিএসএফ নিজে থেকে এই ঘটনা উসকে দিয়েছে। আমাদের দেশের গাছ না কাটতে আসলে এগুলো কিছুই হতো না।
চৌকা সীমান্ত এলাকার বিনোদপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বাদশাহ বলেন, ওরা (ভারতীয় নাগরিকেরা) বাংলাদেশে ঢুকে আমাদের ধাওয়া দিয়েছিলো। তাদের হাতে লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র ছিল। পরে আমরাও ধাওয়া দিয়েছি। তখন বিএসএফ আমাদের দিকে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। আমি যখন ওখানে ছিলাম তখন ৯ টা টিয়ার শেল মেরেছিলো।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। বিএসএফ ও বিজিবি তাদের নিজ দেশের নাগরিকদের সীমান্ত থেকে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে গিয়েছে। এছাড়াও বাড়তি সদস্য মোতায়ন করেছে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
