দেশের বাজারে যখন বাড়ছে দেশীয় পেঁয়াজের মজুত, কমছে দাম– এমন সময়ে ভারত সরকার বাংলাদেশে আগের চেয়ে দাম কমিয়ে পেঁয়াজ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টনপ্রতি পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ১০০ ডলার বা দেশীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১২ হাজার ১৯৬ টাকার সমান (১ ডলার সমান ১২১ টাকা ৯৬ পয়সা ধরে) কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেনাপোলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান রয়েল ইন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রয়েল হোসেন।
রয়েল হোসেন জানান, নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় পণ্যটির ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে রপ্তানি মূল্য কমিয়েছে ভারত। বর্তমানে প্রতিটন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৩০৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে দেশটি। যা আগে ছিল ৪০৫ মার্কিন ডলার।
এতে দেশে পেঁয়াজের আমদানি যেমন বাড়বে তেমনি দাম কমে আসবে বলে মনে করছেন আমদানিকারকেরা। গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় পেঁয়াজের এই ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করে ভারতের মূল্য নির্ধারণী সংস্থা। নতুন এই মূল্য সোমবার থেকেই কার্যকর বলে জানিয়েছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রতিটন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ছিল ৪০৫ মার্কিন ডলার। এর কমে কোনো এলসি গ্রহণ করা হচ্ছিল না। এখন থেকে প্রতিটন পেঁয়াজ ৩০৫ মার্কিন ডলার মূল্যে এলসি দেওয়া যাবে। তবে রপ্তানি শুল্ক আগের মতোই থাকবে।
বাংলাদেশ–ভারত চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরববাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রেখেছে আমদানিকারকেরা। তবে ভারত সরকার সে দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য বাড়িয়ে দেয় বিভিন্ন সময়। এর ফলে দেশের বাজারে পণ্যটির দাম যায় বেড়ে।।
সম্প্রতি দেশের বাজারেও নতুন মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধির ফলে মূল্য কমেছে। ফলে ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা অনেকটাই কমে যায়। এ কারণে বাড়তি দামে পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসানের মুখে পড়ে আমদানিকারেরা। এই অবস্থায় লোকসান থেকে বাঁচতে বন্দরে পেঁয়াজের লোডিং কমিয়ে দেওয়ার কারণে পেঁয়াজের আমদানি অনেকটাই যায় এসেছে।
বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। ফলে সে দেশে পণ্যটির দাম কমছে। এ কারণে সম্প্রতি ভারতীয় কৃষকেরা বিক্ষোভ করছেন। এমন অবস্থায় রপ্তানি বাড়াতে ভারত সরকার এই পদক্ষেপ নেয়।
রপ্তানিমূল্য কমার ফলে বর্তমানে এক ট্রাক পেঁয়াজ আমদানিতে ভারতকে ৫০ হাজার রুপির মতো কম শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে ২ রুপি। সেই সঙ্গে এক ট্রাক পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে আগের চেয়ে ৪ লাখ টাকা করে কমে এলসি খোলা যাবে।
এসব বিষয়ে বন্দর কর্তুপক্ষ জানিয়েছে, দাম কমানোর বিষয়টি তারা শুনেছেন। অফিসিয়ালি কোনো চিঠি পাননি।