আগামী মঙ্গলবার সম্ভব না হলেও শুক্রবারের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন দেবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এ কমিশনের প্রধান এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার আগে নতুন নির্বাচন কমিশনের মতামত নিয়েছে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
সীমানা পুননির্ধারণ, ভোটার তালিকায় তরুণদের যুক্ত করার বিষয়ে কী সংস্কার প্রয়োজন তা তুলে ধরেছে ইসি।
বদিউল আলম বলেন, “নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের কাছে দেওয়ার চেষ্টা করব, তা না হলে জানুয়ারির ৩ তারিখের মধ্যে দিয়ে দেব।”
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে গত ৩ অক্টোবর আট সদস্যের এ কমিশন গঠন করে।
৯০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে কমিশনের।
রোববার সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছেন; সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন খুবই শিগগির দিয়ে দেবেন। আমাদের কোনো সুপারিশ বা বক্তব্য আছে কি না তা জানতে চেয়েছেন। আমরা বিভিন্ন বিষয়ে যেটা ফিল করছি সেগুলো জানিয়েছি।”
কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত কিছু আছে, ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কিছু বিষয় আছে। যেগুলো নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো বিষয়ে আমাদের কিছু সুপারিশ থাকবে। ওনারা সুপারিশ করুক আর না করুক, আমাদের তা অ্যাড্রেস করতে হবে। তা না হলে আমরা সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে পারছি না। ভোটার লিস্টের মধ্যে হয়ত যদি ইয়াংগার জেনারেশনকে আনতে চাই, কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। সংস্কার নিয়ে তাদের (সংস্কার কমিশন) চিন্তাভাবনা রয়েছে।”
সিইসি বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়গুলো জানতে চাওয়া হয়নি। ইসির কী প্রয়োজন, সেগুলো বলা হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলো ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাচ্ছে, এটা কি সম্ভব এবং প্রধান উপদেষ্টাও বলে দিয়েছেন এটা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার-এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় তো ১৬ ডিসেম্বর ঘোষণা দিয়েছেনই যে মিনিমাম সংস্কার করা হলে এ বছরের শেষের দিকে আর সংস্কার যদি সত্যিকার অর্থ করতে হয় তাহলে পরের বছরের জুন মাস এসে (নির্বাচন) যাবে। আমরা উনার বক্তব্যের আলোকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। সেটা যখনই হোক।”
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন তো স্টেকহোল্ডার। ওনাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে ওনাদের কোনো সুপারিশ আছে কি না।
গণআন্দোলনে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এক মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গঠিত কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।
দেড় মাস শূন্য থাকার পর এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে নতুন কমিশন গঠিত হয় ২১ নভেম্বর।
নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর ৪ ডিসেম্বর নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন মত বিনিময়ও করেছে।