Dianta-News-PNG
ঢাকা রবিবার- ১৯শে জানুয়ারি ২০২৫, ৫ই মাঘ ১৪৩১, ১৮ই রজব ১৪৪৬ সকাল ৯:২৩

তিস্তা নদীর বুকে কৃষি বিপ্লবঃ ৫০ হাজার হেক্টরে ফসলের আবাদ

দিগন্ত নিউজঃ
ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪ ৭:৪৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

তিস্তা নদীর বুকে কৃষকদের আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে এবং বিভিন্ন ফসলের সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে রিপোর্ট করা হয়েছে। সরকারের বিশেষ প্রণোদনা এবং কৃষি বিভাগের তদারকির ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলায় ১১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তার বুকে অন্তত ১৫০ চরে ফসলের আবাদ হয়েছে।

গত অক্টোবরে ভারতের সিকিমে তিস্তার বাঁধ ভেঙে প্রচুর পরিমাণে বালু জমার কারণে তিস্তার বুকে সব ধরনের ফসল চাষ সম্ভব হয়েছে। কৃষি বিভাগের মতে, দেশে ১১৫ কিলোমিটার তিস্তার বুকে প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমি আছে। গত বছর শুকনো মৌসুমে ২০-২২ হাজার হেক্টরে ফসল চাষ হতো, কিন্তু এ বছর প্রায় ৫০ হাজার হেক্টরে আবাদ হয়েছে। তিস্তাপাড়ের কৃষকরা পলিমাটির কারণে জমি উর্বর হয়ে ওঠায় আশানুরূপ ফসল পেয়েছেন। এই উন্নয়নের ফলে তিস্তার চর অঞ্চলে কৃষি কার্যক্রম আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন ফসলের মধ্যে ভুট্টা ২০ হাজার হেক্টরে এবং ধান ৫ হাজার হেক্টরে চাষ হয়েছে। এছাড়াও, আলু, গম, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ, কুমড়া সহ শীতকালীন নানা জাতের সবজি প্রায় ২৫ হাজার হেক্টরে চাষ করা হয়েছে।

তিস্তাপাড়ের কৃষকরা জানান, ‘উজানে ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তার চুংথাং বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে বন্যার পানির সঙ্গে বিপুল পরিমাণে পলিমাটি আসায় তিস্তার বুকে জমি উর্বর হয়ে উঠেছে। এ বছর আগাম বন্যা পরিস্থিতি না হলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষণ মাথার চেয়ে বেশি ফসল উৎপাদন হবে বলে আশা করছি।’

তিস্তার কৃষক গুলজার খান বলেন, ‘আমাদের দুঃখ-কষ্ট বলতে আমাদের স্থায়ী বাড়ি হয় না। তাছাড়া আমরা সব চাষাবাদ করতে পারি। বছরে তিন খন আবাদ হয়, আর পানি বেশি থাকলে মাছ ধোরি এবং ফসল ফলাদির আবাদ শেষে অবসর সময়ে মাছ মেরে জীবন যাপন করি। ফসলের দাম বাড়তি হাওয়ায় প্রত্যেকটা ফসলে আমরা লাভের মুখ দেখতেছি।’

আর একজন কৃষক মিথুন কুমার বললেন, ‘তিস্তার চরের লোকজন ভুট্টা, বাদাম, গম, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, তামাক, ধান, মরিচ, শাকসবজি, গবাদি পশু পালন আরো কত কিছু চাষ করা যায়। এই নদীই আমাদের আশীর্বাদ আমাদের ভাগ্য।’

হাতিবান্ধা উপজেলা কৃষি অফিসার কার্তিক কুমার জানান, ‘আমাদের কৃষি বিভাগে তিস্তার চরের কৃষকদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। কারণ সেখানে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে তারা যে ফসল উৎপাদন করে তা আমাদের উপজেলার কৃষিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা কৃষকদের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক থেকে খুবই সীমিত সুদে এবং সহজ উপায়ে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করে থাকি। আর যথারীতি কৃষি পরামর্শ তো দিয়ে থাকি তাদের সঙ্গে মাঠে থেকে।’

কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিস্তার চর অঞ্চলে কৃষি কার্যক্রমের সাফল্য দেখে ভবিষ্যতে আরও নানাবিধ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে চরের কৃষকদের আরও সহায়তা প্রদান করা হবে এবং তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।

তিস্তা নদীর চর অঞ্চলে কৃষকের আবাদি জমিতে পরিণত হওয়া এবং বাম্পার ফলনের সাফল্য এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। সরকারের প্রণোদনা ও কৃষি বিভাগের তদারকির ফলে এই সাফল্য এসেছে। কৃষকদের পরিশ্রম এবং সরকারের সহায়তায় তিস্তার চর অঞ্চলে কৃষি কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

দিগন্ত নিউজ/নয়ন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল দিগন্তনিউজ.কম ’এ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি- আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন Gmail Icon ঠিকানায়।
আজকের সর্বশেষ সবখবর
  • আপনার এলাকার খবর খুঁজুন

    খুঁজুন
  • Design & Developed by: BD IT HOST