চালচলনে বেপরোয়া, বিপরীত পক্ষকে বিনা দ্বিধায় আক্রমণ শানানো চরিত্রগুলো কেন ভারতের বক্স অফিসে এত সফল? এই প্রশ্নের উত্তরে অভিনেতা আমির খান জানিয়েছেন, সম্প্রতি জয়জয়কার পাওয়া এ ধরনের চরিত্র তৈরির ‘বিপক্ষে’ আমির খান।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন আমির খান-
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে আমির কথা বলেছেন গত বছর মুক্তিপ্রাপ্ত রণবীর কাপুরের ‘অ্যানিমাল’ এবং সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া আল্লু অর্জুন অভিনীত ‘পুষ্পা ২ঃ দ্য রুল’ সিনেমা নিয়ে।
দক্ষিণী তারকা আল্লু অর্জুনের ‘পুষ্পা’ সিক্যুয়েল এবং রণবীর কাপুরের ‘অ্যানিমাল’—দুই ছবিই বক্স অফিসে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিশেষ করে এই সিনেমাগুলোতে নায়িকা রাশমিকা মান্দানার উপস্থিতি দর্শকদের আকৃষ্ট করলেও, সমালোচকরা বলছেন, নারী চরিত্রের ভূমিকা কেবল নাচের দৃশ্যে ‘ঔজ্জ্বল্য’ বাড়ানোতে সীমাবদ্ধ।
পুরুষতন্ত্রের প্রাধান্যে উদ্বিগ্ন আমির-
এই ধরণের ছবির ‘পৌরুষের জয়জয়কার’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আমির খান বলেন, “এই চরিত্রগুলোর বক্স অফিসে সাফল্য প্রমাণ করে যে, আমাদের সমাজ এখনো পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণায় নিমজ্জিত। এই ধারা শুধু সমাজকে পিছিয়ে দিচ্ছে। চাইলেও এই বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “অনেকেই সরাসরি পুরুষতন্ত্রকে সমর্থন করে। আবার কেউ কেউ চুপিসারে কিংবা সুক্ষ্মভাবে এর প্রচার চালায়। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
ধীরে ধীরে পরিবর্তনের তাগিদ-
পুরুষতন্ত্রের গভীরে শিকড় গেড়ে বসার প্রসঙ্গে আমির বলেন, “এটা এমন কিছু নয়, যা একদিনে পরিবর্তন করা সম্ভব। এর বীজ বহুদিন ধরেই বপন করা হয়েছে। বহু পুরুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে। তারা মনে করে, নারীদের স্বাধীনতা কতটুকু হওয়া উচিত, তা তারাই নির্ধারণ করবে। এটা ভয়ংকর মানসিকতা। তবে এসব পরিবর্তন ধীরে ধীরে হলেও সম্ভব।”
গল্পের শক্তিতে পরিবর্তনের আহ্বান-
মানুষের মনোভাব পরিবর্তনের জন্য গল্পের শক্তিকে কাজে লাগানোর তাগিদ দিয়েছেন আমির খান। তার মতে, “যুক্তি দিয়ে বোঝানো দীর্ঘমেয়াদে কাজ করে না। মানুষের আবেগকে স্পর্শ করতে ভালো গল্প বা চিত্রনাট্য প্রয়োজন। এতে পরিবর্তন আসতে পারে।”
সমালোচকদের মতে, দক্ষিণী সিনেমা এবং বলিউডের সাম্প্রতিক ট্রেন্ড সমাজের পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। তবে আমির খানের মতো তারকার সরব হওয়া পরিবর্তনের আশা জাগায়।