Dianta-News-PNG
ঢাকা রবিবার- ২৬শে জানুয়ারি ২০২৫, ১২ই মাঘ ১৪৩১, ২৫শে রজব ১৪৪৬ বিকাল ৪:৫৭

৬৯ কারাগারের ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৭০ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক

দিগন্ত নিউজঃ
ডিসেম্বর ৪, ২০২৪ ২:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

দেশে এই মুহূর্তে ৬৯টি কারাগার রয়েছে। এই কারাগারগুলোর ধারণ ক্ষমতা ৪২ হাজার। ৫ আগস্টের পর ৫০ হাজারের কিছু বেশি ছিল। তারপর কারাবন্দির সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে ৬৫ হাজার কারাবন্দি রয়েছে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে কারা সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান এই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, কারা উপ-মহাপরিদর্শক মনির আহমেদ, সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মো. আবু তালেব, সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (উন্নয়ন ও মিডিয়া) মো. জান্নাত উল ফরহাদ।

কারা মহাপরিদর্শক বলেন, বর্তমানে দেশে মোট ৬৯টি কারাগার রয়েছে। এরমধ্যে ১৭টি কারাগার অনেক পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ। সরকার বিষয়গুলো জানেন, এগুলো অতিদ্রুত সংস্কার, মেরামত ও পুনর্নির্মাণ দরকার।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, ৫ আগস্ট ও পরবর্তী সময়ে ২২ শতাধিক কারাবন্দি পালিয়েছিল। ১৫শ জনকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক।

এক প্রশ্নের জবাবে মহাপরিদর্শক বলেন, বিভিন্ন মামলায় দাগি আসামি বা যাদেরকে শীর্ষ সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে তাদের ১১ জন মুক্তি পেয়েছেন। যাদের জেএমবিসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য বলা হয়েছে তাদের ১৭৪ জন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। পালানো বিভিন্ন আলোচিত মামলা ও জঙ্গি সদস্যের মধ্যে এখনো পলাতক ৭০ জন। তাদের গ্রেপ্তারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন তো চারজন জেল সুপারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ে বেশ কিছু অভিযোগের পর্যালোচনা ও তদন্ত চলছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, কোন মামলার কোন আসামি জামিন পাচ্ছেন তা আমরা জানানোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা একটি হট লাইন চালু উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সেটি চালু হলে জানতে সুবিধা হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন এক বন্দির ওপরে হামলার ঘটনা ঘটেছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কারা- ডিজি বলেন, যখন আমরা কোনো বন্দিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই, কারাগারের বাইরে হলেও সে জায়গাটা কিন্তু কারা অধিদপ্তরে নিয়ন্ত্রণে বা আওতায়। কারণ সেখানে নিরাপত্তায় কারারক্ষী থাকেন। নিরাপত্তা দুর্বলতার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বন্দির উপরে হামলার ঘটনাটি ঘটেছিল। তবে সেখানে কারারক্ষী ছিল ও তাদের হস্তক্ষেপের কারণেই ঘটনাটি বেশি দূর গড়াতে পারেনি।

পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, সেটা হচ্ছে কারা হাসপাতাল। কারা হাসপাতালের কাজটি সম্পন্ন হলে কারাবন্দিদের আর সরকারি হাসপাতালে পাঠানোর প্রয়োজন হবে না, তখন নিরাপত্তাহীনতাও থাকবে না।

চিকিৎসাধীন বন্দিদের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, কোনো সরকারি হাসপাতালে কিন্তু প্রিজন সেল নেই৷ এটা আমাদের দুর্বলতা। সরকার কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালে প্রিজন সেল স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। অনেক ক্ষেত্রে অন্যান্য সাধারণ রোগীর সঙ্গে বন্দিদের চিকিৎসা দিতে হয়। কারা হাসপাতাল হয়ে গেলে এ সমস্যা সমাধান হবে।

নানা মহলের দাবির প্রেক্ষিতে কারা অধিদপ্তরের লোগো পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল সরকার আমাদেরকে কারা অধিদপ্তরের লোগো পরিবর্তনের পরামর্শ বা মতামত দেননি। আমরা গত ৫ আগস্টের পর প্রচুর জনসাধারণের ফিডব্যাক পেয়েছি। সেটির মূল বিষয় ছিল কারা অধিদপ্তর লোগো পরিবর্তনের বিষয়।

৫ আগস্ট পরবর্তী প্রতিটি কারাগারের ঘটনা পর্যালোচনা করেছি। আমাদের কারাগারের অবকাঠামোগত দুর্বলতা ছিল। আরেকটি বাইরের নিরাপত্তা, যেটি পুলিশ সদস্যরা দিয়ে থাকেন। নিরাপত্তা অনুপস্থিতির কারণে আমরা কারাগার থেকে পালানো ঠেকাতে পারিনি। আমরা অভ্যন্তরীণ ও বাইরের নিরাপত্তার কিছু দুর্বলতা শনাক্ত করেছি সেগুলো সরকারকে জানানো হয়েছে।

নরসিংদী জেলা কারাগারের জেল সুপারকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। ২০১ জন কারাগারে নিয়োজিত বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারী আহত হয়েছিলেন। তাদের অনেককেই আমরা সহযোগিতা করেছি।

রাজনৈতিকভাবে যারা ডিভিশিন পাওয়ার উপযুক্ত তারা সবাই ডিভিশন পাচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে কারা মহাপরিদর্শক মোতাহের হোসেন বলেন, ডিভিশন পাওয়ার দু’টি বিধান আছে- একটি হচ্ছে প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা। আরেকটি সমাজের গণ্যমান্য, মন্ত্রী এমপিরা। জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করতে হয়। এটা তাদের এখতিয়ার- আবেদনের প্রেক্ষিতে তারা ডিভিশনের নির্দেশ দেন।

কারা কর্মচারীদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তো সার্ভিস। সিভিল সার্ভিস বিধান আলোকে কারা কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু কারা অধিদপ্তরে কর্মরতদের কার্যক্রম তো পোশাকধারী অস্ত্রধারী দু’টোই আছে। একই আইনের কারা অধিদপ্তর পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা মনে করছে। সেজন্য আমরা ভিন্ন আইনের কথা বলছি।

দিগন্ত নিউজ/নয়ন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল দিগন্তনিউজ.কম ’এ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি- আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন Gmail Icon ঠিকানায়।
আজকের সর্বশেষ সবখবর
  • আপনার এলাকার খবর খুঁজুন

    খুঁজুন