সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে কারাগারে নেওয়ার সময় ঘটে যাওয়া সহিংসতার মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০ থেকে ১৫ জনকে।
গতকাল ২৯ নভেম্বর (শুক্রবার) গভীর রাতে ভুক্তভোগী নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেছেন বলে জানিয়েছে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ।
এছাড়াও আদালত এলাকায় হামলার ঘটনায় আইনজীবী সাইফুলের বড় ভাই খানে আলম বাদী হয়ে ১১৬ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন। দণ্ডবিধি এবং বিস্ফোরক আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন— চন্দন, আমান দাস, শ্রী শুভ কান্তি দাশ, বুজা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত, রুমিত দাশ, নয়ন দাশ, গগন দাশ, বিশাল দাশ, ওমকার দাশ, বিশাল, রাজকাপুর, লালা, সামির, সোহেল দাশ, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, শ্রী গণেশ, ওম দাশ, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, লালা, দুর্লভ দাশ ও রাজীব ভট্টাচার্য্য।
অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, শুক্রবার গভীর রাতে মামলাটি কোতোয়ালী ধানায় লিপিবদ্ধ হয়।
এডিসি তারেক আজিজ বলেছেন, আইনজীবীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেছেন আলিফের ভাই খানে আলম, যেখানে ১১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে কারাগারে নেওয়ার সময় সহিংসতা ও আইনজীবী খুনের ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছিল পুলিশ।
গত ২৬ নভেম্বরের চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সহিংসতার ঘটনায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ; এ পর্যন্ত মোট ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় এই প্রথম মামলা দায়ের করল তার পরিবার।
সেদিন রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন।
আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে। এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।
নগর পুলিশের উপ কমিশনার (ক্রাইম) রইছ উদ্দিন বলেন, ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে খুন হয় আইনজীবী আলিফ। সড়কে লুটিয়ে পড়া অবস্থায় তাকে বেশ কয়েকজন এলোপাথারি মারধর করছে দেখা যায়।
পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে আইনজীবী আলিফ মারা যান বলে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন জানান।
