ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের কর্মকাণ্ডকে বসনিয়া-হার্জেগভনিয়ার ‘কসাই’ রাদোভান কারাদজিচের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
বুধবার (২০ নভেম্বর) জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবাতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও এনটিএমসি সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানসহ ৮ সাবেক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানির সময় এ মন্তব্য করেন চিফ প্রসিকিউটর।
জানা যায়, এ সময় ট্রাইব্যুনালে ক্ষিপ্ত আচরণ করেন জিয়াউল আহসান। তবে সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনসহ অন্য ৭ আসামি শুনানি চলাকালে নিরব ছিলেন।
এর আগেও গত ১৮ নভেম্বরের শুনানিতেও বিগত সরকারের হত্যাকাণ্ডকে নাৎসি বাহিনী ও বসনিয়া-হার্জেগোভিনার ‘কসাই’ রাদোভান কারাদজিচের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন চিফ প্রসিকিউটর।
এ বিষয়ে তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, জিয়াউল আহসান বিভিন্ন সময় র্যাবের বিভিন্ন পদে ছিলেন, সর্বশেষ তিনি এনটিএমসির মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি (জিয়াউল আহসান) বাংলাদেশে গুম, গুমের জন্য ধরে নিয়ে গিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন, হত্যার পর মরদেহ ডিসপোজাল করা, এসব কালচারের জনক ছিলেন।
চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যারা বিরোধীদলে থেকে বিভিন্ন সময় কথা বলার চেষ্টা করেছেন তাদের তিনি (জিয়াউল আহসান) একের পর এক পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করেছেন, গুম করেছেন, বছরের পর বছর আটকে রেখেছেন। তাদের মধ্যে বহু মানুষ আজও ফিরে আসেননি।
তাজুল ইসলাম ট্রাব্যুনালে শুনানিতে বলেন, জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে বিএনপি নেতা ইলিয়াসকে গুম করে হত্যা করা হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। এছাড়াও নাম জানা-না জানা অনেক মানুষকে অপহরণের পর নির্যাতন করা হয়েছে। তার পৈশাচিকতা ৯০-এর দশকে বসনিয়া-হার্জেগভনিয়ার সারফিয়ান বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল, যে ধরনের অত্যাচার করতো, তার সাথে আমরা তুলনা করেছি।
বলকানের কসাইয়ের মতো বাংলাদেশের কসাই হিসেবে এই জিয়াউল আহসান হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে, গুম নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যোগ করেন চিফ প্রসিকিউটর।