অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন প্রধান উপদেষ্টা। এর আগে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকগুলো রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। এসেই তিনি সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনের (২০ তলা ভবন) ১৩ তলায় তার কার্যালয়ে যান। সেখানেই মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টাকে সচিবালয়ে অভ্যর্থনা জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
প্রধান উপদেষ্টার সচিবালয়ে আসাকে কেন্দ্র করে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সচিবালয়সহ আশেপাশের এলাকাতেও রয়েছে এ নিরাপত্তা।
আজ উপদেষ্টা, সচিব, ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না অন্য কোনো গাড়ি। দর্শনার্থী প্রবেশও সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আসবেন বলে সকাল থেকেই সচিবালয়ে ছিল নিরাপত্তার কড়াকড়ি। সচিবালয়ের প্রবেশ ও বের হওয়ার গেট এবং সচিবালয়ের ভিতরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।
৬ নম্বর ভবনের চারপাশ ঘিরে রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ ভবনের চারপাশে কোনো গাড়ি পার্কিং করতে দেওয়া হচ্ছে না।
আজকে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অধ্যাদেশ, ২০২৪’ এর খসড়া অনুমোদনের জন্য উঠছে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের এ অধ্যাদেশের বিষয় বলেন, আদালত যদি মনে করে তাহলে অপরাধী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করতে পারবে।
ওই উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে, নির্বাচন কমিশন আছে। আদালত যদি মনে করে তারা সেটা করতে পারবে। তবে শাস্তি দিবেই, এমন নয়। এখন উপদেষ্টা পরিষদের ওপর নির্ভর করছে, তারা এটাকে কীভাবে গ্রহণ করে। এটা রাখবেন কি না কিংবা রাখলেও কি ফর্মে রাখবেন।
উল্লেখ্য- গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ততকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন। ওইদিনই বিলুপ্ত হয় মন্ত্রিসভা। পরদিন ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। এরপর গত ৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এপর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টাসহ মোট ২৪ জন উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকার রাখা হয়েছে।