বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ৯০টির বেশি চলচ্চিত্র মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালে। মুলত সংখ্যাটা ছিল ৯১টি চলচ্চিত্র। সে বছরের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের মতে, ‘কমলার বনবাস’ চলচ্চিত্রটি সে বছর ছিল সেরা দশের মধ্যে। এর প্রভাব বাংলাদেশেই নয়, ছিল ওপার বাংলাতেও। আর সিনেমাটি হয়েওছিল বেশ ব্যবসাসফল একটি সিনেমা।
কমলার বনবাস’ চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশে মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালের ২২ আগস্ট। এর কেন্দ্রীয় ভূমিকায় ছিলেন আনোয়ার শরীফ ও উত্তরা। পরিচালনা করেন ফিরোজ আল মামুন।
অন্যদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নতুন কলাকুশলীদের নিয়ে একই শিরোনামে এটি মুক্তি পায় ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮। স্বপন সাহা পরিচালিত এ ছবিটিও সেখানে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাপস পাল ও শতাব্দীয় রায়।
সংক্ষিপ্ত কাহিনি-
কমলা হচ্ছে রাজা সাঁচি ও তাঁর স্ত্রী চিত্রার একমাত্র কন্যা। কমলা একদিন সখিদের সাথে প্রমোদভ্রমণে বের হয়, সেখানে কমলাকে দেখে রাজপুত্র কাঞ্চন কুমারের ভালো লেগে যায়। এরপর কমলা ও কাঞ্চন কুমার দুজনেই প্রেমে পড়েন।
দুই পরিবারের সম্মতিতে কাঞ্চন ও কমলার বিয়ে হয়। বাসর রাতে একজন তপস্বী চামুণ্ডা তান্ত্রিক কাঞ্চন কুমারের সামনে প্রকট হন। তিনি তাকে নীল সরবরের কাছ থেকে নীল পদ্ম আনতে বলেন যা তার পিতা ভগবান ভোলানাথের কাছে মানত করেছিলেন।
কাঞ্চন কুমার তার পিতার প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে বাসর রাতেই নীল পদ্মার সন্ধানে রওনা হন। যাত্রাপথেই কাঞ্চন কুমার অস্বস্তি বোধ করেন এবং তার স্ত্রীর সাথে দেখা করতে চান। এবার তপস্বী অলৌকিকভাবে তাকে স্ত্রীর সাথে দেখা করতে সাহায্য করলেন।
সকালে কাঞ্চনের মা তার পুত্রবধূর অবস্থা দেখে বুঝতে পারেন রাতে তার ঘরে কোনও পুরুষ ছিল। কমলাকে তার আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
কিন্তু জল্লাদের দয়ায় কমলা প্রাণে বেঁচে বনে পালিয়ে যান।
কিছুদিন পরেই তিনি বুঝতে পারেন যে, তিনি গর্ভবতী। তিনি মানিক কুমার নামে একটি পুত্রের জন্ম দেন।
কিন্তু তার ছেলে অন্য এক মহিলার সাথে বিনিময় করে যে একটি মৃত সন্তানের জন্ম দেয়।
একদিন কমলা তার ছেলেকে খুঁজে পান, তিনি তার ছেলেকে ফেরত পাওয়া দাবি করলেন।
অবশেষে কমলা তার ছেলেকে ফিরে পেলেন; অন্যদিকে কাঞ্চন কুমার “নীল পদ্ম” নিয়ে তার সাম্রাজ্যে ফিরে আসেন এবং জানতে পারেন, যে তার স্ত্রী আর প্রাসাদে নেই।
তিনি তৎক্ষণাৎ স্ত্রীর খোঁজে বের হন এবং অনেক দিন ধরে অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে অবশেষে স্ত্রী ও সন্তানের সন্ধান পান।
সবাই আবার একত্রিত হয়ে তাদের প্রাসাদে ফিরে আসেন।
