Dianta-News-PNG
ঢাকা শুক্রবার- ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২, ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ ভোর ৫:৪৫
 

কর্জে হাসানাঃ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ দান

জে এম আলী নয়নঃ
অক্টোবর ২৫, ২০২৪ ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

এই আয়াত (আল-ইসরা ১৭:৭১) বলছে যে, আল্লাহ সেদিন আমাদের কাজের ভিত্তিতে আমাদের ডাকবেন। যারা ভালো কাজ করেছে, তারা সেদিন সুখী হবে। এর মানে হলো, আমাদের কাজের উপর আমাদের বিচার হবে, এবং সৎ কাজ করলে আমরা সুখী ফল পাব। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের কাজের গুরুত্ব আছে এবং আমাদের সৎ ও ন্যায়পরায়ণ হতে হবে।

ইসলামে কর্জে হাসানা (সুদ মুক্ত ঋণ প্রদান) একটি মহান কাজ। এটি আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস এবং মানবতার কল্যাণের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়। কর্জে হাসানা মানে হলো এমন ঋণ, যা কোনো লাভের উদ্দেশ্যে নয়, বরং মানুষের সাহায্য করার জন্য দেওয়া হয়।

ইসলাম অনুযায়ী, মানবতার প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করা জরুরি। কর্জে হাসানা প্রদানের মাধ্যমে সমাজে সমতা এবং সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। যখন একজন ব্যক্তি বা পরিবার বিপদের সম্মুখীন হয়, তখন তারা কর্জে হাসানার মাধ্যমে সাহায্য পেতে পারে। এটি একটি শক্তিশালী নীতি যা সমাজে দারিদ্র্য দূরীকরণের সহায়ক।

আল্লাহ্ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, “যারা নিজেদের সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, তাদের জন্য রয়েছে অসীম পুরস্কার”সুরা আল-বাকারা (২) আয়াতঃ ২৬১)। এই আয়াতটি কর্জে হাসানার গুরুত্বকে তুলে ধরে। এটি দান করার একটি উৎসাহ প্রদান করে, যেখানে মানুষ একে অপরের সহায়তা করতে পারে।

কর্জে হাসানার বিভিন্ন দিক রয়েছে। একদিকে এটি ব্যক্তি ও সমাজের মধ্যে সম্পর্ক মজবুত করে, অন্যদিকে এটি আত্মিক শান্তি এনে দেয়। যখন আমরা অন্যদের সাহায্য করি, তখন আমাদের মনে একটি ভালো অনুভূতি সৃষ্টি হয়। এটা আমাদের চরিত্রকে উন্নত করে এবং আমাদের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি বাড়ায়।

অর্থনৈতিক সংকটে পড়া মানুষের জন্য কর্জে হাসানা একটি আশার আলো হতে পারে। যারা ব্যবসা বা শিক্ষা নিয়ে এগোতে চান, তাদের জন্য এই ঋণ একটি নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে। এর ফলে তারা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারে এবং সমাজের উন্নয়নেও অবদান রাখতে পারে।

আরও পড়ুন—    কর্জে হাসানাঃ নেকি ও সোয়াব ইনকামের সুযোগ

এছাড়া, ইসলামে কর্জে হাসানা প্রদানকারীদের জন্য বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। যারা এই দান করেন, তাদের জন্য আল্লাহ্র পক্ষ থেকে বিশেষ পুরস্কার প্রতিশ্রুত। এটি আমাদেরকে দান করার অনুপ্রেরণা জোগায়, যাতে আমরা সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল হতে পারি।

অন্যদিকে, কর্জে হাসানা প্রদান করার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। ঋণগ্রহীতার সক্ষমতা বিবেচনা করে সাহায্য করতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মানবতার উন্নয়ন, কিন্তু এমন না যে ঋণ গ্রহীতাকে ঋণ পরিষধের জন্য চাপ দেওয়া। এটি আমাদের আন্তরিকতার পরিচায়ক।

সবশেষে, কর্জে হাসানা কেবল একটি দান নয়, এটি একটি সামাজিক দায়িত্ব। আমাদের উচিত মানবতার জন্য কাজ করা এবং একে অপরের পাশে দাঁড়ানো। ইসলামের এই নীতি সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আশা করি, কর্জে হাসানার এই আলোচনা আমাদের মধ্যে একে অপরের প্রতি সহানুভূতি এবং দানের মনোভাব তৈরি করবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দান করার তৌফিক দিন।

লেখকঃ জে এম আলী নয়ন

দিগন্ত নিউজ/নয়ন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল দিগন্তনিউজ.কম ’এ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি- আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন Gmail Icon ঠিকানায়।
আজকের সর্বশেষ সবখবর
  • আপনার এলাকার খবর খুঁজুন

    খুঁজুন