এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা ফল বাতিল করে পুনরায় ফল তৈরি ও প্রকাশের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভের ঘটনায় আটক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৬ নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয়ে ৬০ জনকে আসামি করে মামলা দেওয়া হয়েছে। বাকি ২৮ জন মুচলেকা দেওয়ায় তাদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি বলেন, সচিবালয়ে বিক্ষোভের ঘটনায় আটক শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৮ জন মুচলেকা দেওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দিয়ে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। শাহবাগ থানায় এ নিয়ে মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন— বাটপার আরাফাত ধরা খেয়ে গেলো!
এর আগে, গতকাল বুধবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ২টা ৫০ মিনিটের দিকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা ফল বাতিল করে পুনরায় ফল তৈরি ও প্রকাশের দাবিতে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন শতাধিক শিক্ষার্থী। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে তারা। এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ফল পুনর্মূল্যায়ন ও ফলাফলের ত্রুটি সংশোধনের দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই; উই ওয়ান্ট জাস্টিস; মুগ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই; তুমি কে আমি কে ছাত্র-ছাত্র; আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম-সংগ্রাম’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের স্লোগান বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানান সচিবালয়ে দায়িত্বরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রথমে তাদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা সরে না যাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে সচিবালয়ের সবগুলো ফটক বন্ধ করে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে ৫৩ জনকে আটক করে তারা। পরে সচিবালয়ে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা সেনাবাহিনীর সহায়তায় আটককৃতদের দুটি প্রিজন ভ্যানে তোলেন। তাঁদের শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন— বাংলাদেশে কোটা আন্দোলন- কোলকাতায় ধর্ষণ!
পুলিশ এবং সেনাবাহিনী সদস্যদের তাড়া খেয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে সচিবালয়ের ভেতরে আটকা পড়েন বেশকিছু শিক্ষার্থী। তাদেরকে আটক করে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ বলছেন, সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে ভুল করায় তাদের ফল খারাপ হয়েছে। কারো দাবি খাতা হারিয়ে ফেলায় বা পুড়ে যাওয়ায় তাদের ফল খারাপ হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কেউ কেউ সব বিষয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফল প্রকাশের দাবি জানাচ্ছেন। কারো কারো দাবি বৈষম্যহীন ফল।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তারা সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের নানা অসঙ্গতি দেখছেন। সিলেট বোর্ডের শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ বিষয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিং পেলেও অন্যান্য বোর্ডের শিক্ষার্থীরা বৈষম্যমূলক ফল পেয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমরা সমতার ভিত্তিতে ফলাফল চাই। বোর্ড থেকে কাউকে ভালো ফলাফল দেওয়া হয়েছে আর কাউকে খারাপ। অথচ আমরা ভালো লিখেছি। আমরা চাই দ্রুত সময়ে এই ফলাফল বাতিল করে বঞ্চিতদের পুনরায় মূল্যায়ন করা হোক।