Dianta-News-PNG
ঢাকা শনিবার- ২৫শে জানুয়ারি ২০২৫, ১১ই মাঘ ১৪৩১, ২৪শে রজব ১৪৪৬ রাত ২:২৫

ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে খাবারের ভূমিকা

দিগন্ত নিউজঃ
অক্টোবর ১৮, ২০২৪ ৭:২৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ইনসুলিনের প্রধান কাজগুলোর একটি হলো রক্তপ্রবাহ থেকে গ্লুকোজকে কোষে স্থানান্তর করা, যাতে এটি শক্তির জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। কিন্তু শরীর যখন ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বা প্রতিরোধী হয়ে ওঠে, অগ্ন্যাশয় তখন কোষগুলোকে আরও গ্লুকোজ গ্রহণ করতে বাধ্য করে। এই উচ্চমাত্রা শরীরে নানা সমস্যা তৈরি করে। ডায়াবেটিস, পিসিওসসহ নানা রোগ তৈরি হয় শরীরে। এমনকি হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ঝুঁকির কিছু কারণ—

    • অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা।
    • কোমরের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বি।
    • শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকা।
    • দীর্ঘ সময়ের জন্য বসে থাকা।
    • বার্ধক্য।
    • দীর্ঘ সময় মানসিক চাপের কারণে কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া।
    • কিছু ওষুধ ও রোগ।
    • কিছু এন্ডোক্রাইন রাসায়নিক ব্যাহতকারী পণ্য, যেমন বিপিএ, প্লাস্টিক ইত্যাদি।
    • প্রদাহ।
    • অর্পযাপ্ত ঘুম।
    • জিনগত সমস্যা।

আশার কথা হলো, খাদ্য ও জীবনধারা পরিবর্তন ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে।

কম গ্লাইসেমিক ধরনের শর্করাযুক্ত খাবার
সব ধরনের শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট ব্লাড সুগার বাড়ায়। তবে চিনিযুক্ত বা প্রক্রিয়জাত সাদা কার্বোহাইড্রেট দ্রুত সুগার বাড়ায়। অন্যদিকে কম গ্লাইসেমিকযুক্ত খাবার রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায় ধীরে ধীরে। এ ধরনের খাবার রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। এগুলোর মধ্যে আছে লাল চাল, লাল আটা, মটরশুঁটি ইত্যাদি।

পরিমিত শর্করা গ্রহণ করুন
ইনসুলিন সংবেদনশীল প্রত্যেক ব্যক্তিকে শর্করা কমাতে হবে, ব্যাপারটা এমন নয়। তবে শর্করাজাতীয় খাবারের পরিমাণ কমাতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, সারা দিনে শর্করাযুক্ত খাবার পরিমিত পরিমাণে খেলে ইনসুলিন সংবেদনশীলতায় উপকার পাওয়া যায়।

শর্করাযুক্ত খাবারে মানসম্মত চর্বি ওপ্রোটিন যোগ করা
শর্করাযুক্ত খাবারের সঙ্গে চর্বি ও প্রোটিন যোগ করলে রক্তে শর্করার ওপর গ্লাইসেমিকের প্রভাব কমাতে সাহায্য করবে।

আঁশজাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে
আঁশ শরীরে ক্যানসার, হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, ওজন কমানোসহ বিভিন্ন উপকার করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ডায়েটে ফল, শাকসবজি, গোটা শস্যসহ ৫০ গ্রাম আঁশ যোগ করে; তাদের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত হয়।

পলিফেনলসমৃদ্ধ খাবার খান
উদ্ভিদ রাসায়নিক পলিফেনল প্রায় সব ফল ও সবজিতে পাওয়া যায়। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি, অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য আছে। এগুলো শরীরের ক্ষতিকর কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে, যেমন গ্রিন টি, ডার্ক চকলেট, আপেল, ব্লুবেরি, লাল আঙুর ইত্যাদি।

ম্যাগনেশিয়াম
শরীর যে খনিজ তৈরি করতে পারে না, তার নাম ম্যাগনেশিয়াম। কিন্তু এই উপকরণ প্রতিদিন গ্রহণ করতে হয়। ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে পালংশাক, বাদাম, ডার্ক চকলেট, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।

ক্রোমিয়াম
এ ধরনের খাবার শরীরের ক্ষতিকর কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ক্রোমিয়ামসমৃদ্ধ খাবারের উৎস হলো রসুন, আলু, কমলা, বার্লি, ওটস ইত্যাদি।

দারুচিনি
দারুচিনি শর্করার শোষণ ধীর করে। এটি ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হ্রাস করে। এর প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ডায়াবেটিস কমাতে ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া এটি কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে।

ভিনেগার
গবেষণায় দেখা গেছে, শর্করাসমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে ভিনেগার খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ভিনেগারে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড শর্করার শোষণ ধীর করে। এ অবস্থা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে।

গ্লাইসেমিক সূচকের ওপর প্রভাব
কিছু শর্করাজাতীয় খাবার ঠান্ডা হতে দিন, যেমন আলু রান্না করার পর ঠান্ডা করুন। একই কথা চাল ও পান্তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এ ছাড়া খাবার যত বেশি পাকা হবে, তত বেশি গ্লাইসেমিক সূচক বাড়বে।

পরামর্শ দিয়েছেন: লিনা আকতার, রাইয়ান হেলথ কেয়ার হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর 
দিগন্ত নিউজ/নয়ন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল দিগন্তনিউজ.কম ’এ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি- আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন Gmail Icon ঠিকানায়।
আজকের সর্বশেষ সবখবর
  • আপনার এলাকার খবর খুঁজুন

    খুঁজুন
  • Design & Developed by: BD IT HOST