প্রাথমিকভাবে হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতিকে আগামী রোববার (২০ অক্টোবর) থেকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ‘দলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টের দোসর’ বিচারকদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতেই গত সাড়ে ১৫ বছরে হাইকোর্ট বিভাগে নিয়োগ করা দুর্নীতিবাজ ও দলীয়কর্মীর মতো আচরণকারী বিচারপতিদের অপসারণ দাবিতে চলা আন্দোলন স্থগিত করে সুপ্রিম কোর্ট ছেড়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে আলোচনার পর বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সামনে এসে এ ঘোষণা দেন আজিজ আহমদ ভূঞা।
এই ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছাড়েন। এরপর হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা আগামী রোববার (২০ অক্টোবর) বিকেল পর্যন্ত দেখব।
এর আগে বুধবার সকাল ১১টা থেকে আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট’ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে আসছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন— বিএনপি নেতা হাবিবকে ৫ মাসের কারাদণ্ড
অন্যদিকে হাইকোর্ট বিভাগের ‘দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ’ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি পালন করছিল বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজও।
এই কর্মসূচি চলার মধ্যেই খবর ছড়ায়, প্রধান বিচারপতি হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতিকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও খবর পাওয়া যায়। এখন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল জানালেন, আপাতত হাইকোর্ট বিভাগে ১২ জন বিচারপতিকে প্রাথমিকভাবে কোনো বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে আন্দোলনের মধ্যে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত একজন একজন করে হাইকোর্ট বিভাগের ছয় বিচারপতি সাক্ষাৎ করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে।
তারা হলেন- বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান, বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন, বিচারপতি মো. আখরুজ্জামান, বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন।
এ ছাড়া বিচারপতিদের অপসারণ নিয়ে ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে মামলার রিভিউ শুনানির জন্য আগামী ২০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। রিভিউ নিষ্পত্তির মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণ নিয়ে জটিলতা নিষ্পত্তি হবে বলেও জানানো হয়।