জাতীয় শোক, শিশু ও ঐতিহাসিক ৭ মার্চসহ আটটি দিবস বাতিল করাতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত সেপ্টেম্বর মাসে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে সরকার এসব জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে তথ্য জানানো হয়েছে।
এক্সের সেই পোস্টের মাধ্যমে জনানো হয়- ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস ও ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস বাতিল হচ্ছে।
সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে উপদেষ্টা পরিষদ এসব জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় জানা গেছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাতিল হওয়া আটটি দিবসের মধ্যে পাঁচটিই শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের জন্ম ও মৃত্যু সংক্রান্ত। এর মধ্যে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস।
আরও পড়ুন— ডিমের নতুন দাম নির্ধারণ, কাল থেকে কার্যকর
এ ছাড়া বাতিলের তালিকায় রয়েছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস, ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস।
গত ৭ অক্টোবর তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, আটটি জাতীয় দিবস বাতিল করা সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। শিগগিরই এসব দিবস বাতিল করে পরিপত্র জারি করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেসকো ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বৈশ্বিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এরপর শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে প্রদত্ত ভাষণের দিনটিকে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ সরকার। দিবসটিকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত হিসেবে ঘোষণা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে।
এরপর কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ৭ মার্চের একাধিক অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করা হয়। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়। ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর বা বিজয় দিবস থেকে তা কার্যকর হয়। ২০২২ সালের ৪ নভেম্বর দেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় সংবিধান দিবস পালিত হয়।
এদিকে, ডিজিটাল বাংলাদেশের ইশতেহারকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিবস পালন করে শেখ হাসিনার সরকার।
পরের বছর দিবসটির নাম পরিবর্তন করে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস করা হলেও আবার ২০২৩ সালে তা ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত হিসেবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হয়।
বাতিল হচ্ছে জাতীয় আট দিবস- উপদেষ্টা পরিষদ#DaysCancelled #GovernmentDecision #Bangladesh pic.twitter.com/9LYv38nKzE
— Chief Adviser of the Government of Bangladesh (@ChiefAdviserGoB) ১৬ অক্টোবর, ২০২৪