আবারও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন ড. ইউনূস

সংস্কারের বিষয়ে আগামী শনিবার আবারও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এবারে ৭টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ কথা জানান।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে অন্তর্বতী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে। গত সপ্তাহে একটি সংলাপ হয়েছিল।

তার ধারাবাহিকতায় আগামি শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও সংলাপ করবে সরকার।

রাজনৈতিক দলগুলো হলো- গণফোরাম, এলডিপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দল, লেবার পার্টি, জাতীয় পার্টিকে (আন্দালিব রহমান পার্থ) ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল। এছাড়াও আরো দুই-একটি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে জানা গেছে।

আরও পড়ুন—    সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের পোশাক পরে ডাকাতি

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয়ে আলাপ হবে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে দ্রব্যমূল্য। দ্রব্যমূল্য নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা উদ্বেগ কাজ করছে। দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে আজ কয়েকটা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ডিমের দাম সবচেয়ে ঊর্ধ্বমুখী। আমদানি পর্যায়ে শুল্ক ৩৩ শতাংশ থেকে ১৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ভোজ্যতেলের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমদানি পর্যায়ে পাঁচ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে আনা হয়েছে। ৯৯ শতাংশ গার্মেন্টস চালু হয়েছে। এ ছাড়া নানাবিধ কারণে এক শতাংশ বন্ধ রয়েছে।

জাতীয় পার্টি সংলাপে দাওয়াত পাচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ একটি চলমান প্রক্রিয়া। যাদের সঙ্গে আলোচনা হবে তাদের নাম বলেছি। অন্য কার সঙ্গে আলোচনা হবে সেটা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। উপদেষ্টা পরিষদ এটা নিয়ে কাজ করছে।

এর আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জামায়াত ইসলামীসহ কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এসময় জাতীয় পার্টিকে না ডাকায় বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক সমন্বয়ক প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে জাতীয় পার্টিকে ডাকলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। দলটির বিরুদ্ধে স্বৈরাচার শাসনের সহযোগিতার অভিযোগ এনেছে তারা।

আরও পড়ুন—    ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ জনের মৃত্যু

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে গত ৫ আগস্ট। তারপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার সরকার এরইমধ্যে দুই দফা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছে। তবে আগের দুই দফা ও আগামীতেও ‘ফ্যাসিবাদী শাসন’ ও ‘গণহত্যায়’ অভি্যুক্ত আওয়ামী লীগকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এবং হবে না বলে আগেই সরকার জানিয়েছে।

এদিকে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে সম্প্রতি ওঠা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভ্রান্ত বলে দাবি করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

গত রবিবার তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা করতে না ডাকা আমাদের জন্য বিব্রতকর। আমাদের দলের একটি ঐতিহ্য আছে, এটি একটি পুরোনো দল এবং দেশের উন্নয়নের সঙ্গে আমাদের সংযোগ রয়েছে, রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতাও আছে। তবুও রাষ্ট্র সংস্কারের আলোচনায় আমাদের না ডাকায় আপত্তি নেই। তবে আমাদের বিরুদ্ধে বাইরে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

দিগন্ত নিউজ/নয়ন