দেশে গেল ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। একদিনে মৃত্যুর এ সংখ্যা এ বছর সর্বোচ্চ। এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ও ২ অক্টোবর একদিনে আটজন করে প্রাণ হারিয়েছিলেন এইডিস মশাবাহিত এ রোগে। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৯১৫ জন।
শনিবার (১২ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৩৩১ জন এবং বাকিরা ঢাকার বাইরের। এ সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭৮০ জন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪১ হাজার ৮১০ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৯৫২ জন। শনিবার মারা যাওয়া ৯ জনকে নিয়ে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২১০ জনের মৃত্যু হল। এ রোগে এক বছরে মৃত্যুর এ সংখ্যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২৩ সালে ১৭০৫ জন এবং ২০২২ সালে ২৮১ জনের প্রাণ নিয়েছিল ডেঙ্গু।
আরও পড়ুন— ১৭ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে বোয়িং
এছাড়া বরিশালে ২ জন, চট্টগ্রামে একজন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, শনিবার ভর্তি নতুন রোগীদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩৪৩ জন, ঢাকা বিভাগে ৮৮ জন, ময়মনসিংহে ৪৫ জন, চট্টগ্রামে ১৯৭ জন, খুলনায় ৯৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন, রংপুর বিভাগে ৯ জন, বরিশাল বিভাগে ১০৮ জন ও সিলেট বিভাগে ৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
শনিবার পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৯৪৯ জন রোগী। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩৬৫১ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ১৮৪৯ জন; আর ১৮০২ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি।
এ বছর মোট ভর্তি রোগীদের মধ্যে ২৩ হাজার ৮৫১ জন ঢাকার বাইরের রোগী। ঢাকার দুই মহানগর এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ৯৫৯ জন।
সেপ্টেম্বর মাসে দেশে সবচেয়ে বেশি ১৯ হাজার ২৪১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। ওই মাসেই সবচেয়ে বেশি ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন— চিকিৎসায় নোবেল পেলেন ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রুভকুন
অক্টোবরের প্রথম ১২ দিনে ১০ হাজার ৮৭২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৪৭ জনের।
এর আগে জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১১ জন; যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এপ্রিল মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। মে মাসে ৬৪৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। জুন মাসে ৭৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।
জুলাই মাসে ২৬৬৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়, তাদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়। অগাস্টে ৬৫২১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, যাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।