চলতি ২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় স্থগিত হওয়া বিষয়গুলোর ফল প্রকাশ করা হবে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) বা সমমান পরীক্ষার ফল অনুসারে। অর্থাৎ এসএসসি ও সমমান কোনও পরীক্ষায় যে বিষয়ের যে নম্বর পেয়েছিল, এইচএসসি ও সমমানে সেই নম্বর পাবে। একে বলা হয়ে থাকে সাবজেক্ট ম্যাপিং। আর যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়েছিল যেগুলোর খাতা মূল্যায়নের মাধ্যমে ফল দেওয়া হবে। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলোকে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ড সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত হওয় গেছে।
জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডর চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘স্থগিত পরীক্ষাগুলোর ফল দেওয়া হবে এসএসসি ও সমমানের সাবজেক্ট ম্যাপিং করে। আর যেসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে তার ফল দেওয়া হবে খাতা মূল্যায়ন করে।’
কবে নাগাদ ফল প্রকাশ করা হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ফল প্রকাশের দিন-তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’
তবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্র বলছে, আগামী (অক্টোবর) মাসেই এইচএসসির ফল প্রকাশ হতে পারে। এ জন্য জোরেশোরে প্রস্তুতি শুরু করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
আরও পড়ুন— বাংলাদেশে প্রবেশ, সীমান্তে বিএসএফ সদস্য আটক
সাবজেক্ট ম্যাপিং হলো—একটি বিষয়ে পূর্বতন পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড়। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না হওয়ায় সব পরীক্ষার্থীকে পাস করানো হয়। সে বছর এসএসসি, জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের গড় মূল্যায়ন করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। পরের বছর কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা নিয়ে বাকি বিষয়ের ফল একইভাবে তৈরি করা হয়।
এর আগে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি, সেগুলোতে নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ২৫ শতাংশ এবং এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৭৫ শতাংশ নম্বরকে গড় করার প্রস্তাব দেয় আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী ছিল সাড়ে ১৪ লাখ। পরীক্ষা শুরু হয় গত ৩০ জুন। তবে বন্যার কারণে সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় ৯ জুলাই। স্থগিত হওয়ার আগে ছয় থেকে সাতটি পরীক্ষা হয়েছিল। বাকিগুলো হওয়ার আগেই স্থগিত করা হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষাও নেওয়া হয়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কারণে কয়েক দফা স্থগিত হওয়ার পর ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো শুরুর কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামলে অন্তর্বর্তী সরকার পরীক্ষার সময় আরও দুই সপ্তাহ পিছিয়ে এবং নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু গত ২০ আগস্ট কয়েক’শ পরীক্ষার্থী সচিবালয়ে ঢুকে পরীক্ষা না দেওয়ার দাবি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেদিনই সরকার তাঁদের দাবি মেনে নেয়।
