পুলিশি নিরাপত্তায় হেলিকপ্টারে করে সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে সিলেট থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে তাকে রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস এ তথ্য জানান।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার পুলিশ সুপার, ডিএসবি, সিলেট স্বাক্ষরিত আদেশে (স্মারক নম্বর—৪২৯২) বিচারপতি মানিককে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় পাঠানোর নির্দেশনা দিয়ে তার নিরাপত্তার দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। তাতে কানাইঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অলক শর্মা ও এসএএফ পুলিশ লাইনস সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হাইকে হেলিকপ্টারে বিচারপতি মানিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আদেশে আরও বলা হয়, পুলিশি এই নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক তদারকি করবেন সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. রফিকুল ইসলাম ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।
আরও পড়ুন— যে ৫ ভুল করবেন না মসজিদে
এ বিষয়ে জানতে সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। যে কারণে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস এ তথ্য জানান, র্যাবের হেলিকপ্টারে সিলেট থেকে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ঢাকায় আনা হয়েছে। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে তাকে বহন করা হেলিকপ্টার অবতরণ করে। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে তাকে সোপর্দ করা হয়েছে।
এর আগে, আজ দুপুরে সিলেট আদালতের পরিদর্শক জমসেদ আলম জানান, ‘কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ চেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য মানিককে আদালতে তোলা হয়। গ্রেপ্তার দেখানোর পর জামিনযোগ্য অপরাধ হওয়ায় আদালত তাকে এই মামলায় জামিন দেন। তবে, অন্যান্য মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। হত্যাসহ গুরুতর অপরাধে সহযোগিতায় ঢাকার পাঁচটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ঢাকার আদালতে হাজির করার জন্য তাকে কেরানীগঞ্জের কারাগারে স্থানান্তর করা হবে।’
এর আগে, আজ সকাল ৯টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে সিলেটের আদালতে হাজির করা হয়। কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার মামলায় অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অঞ্জন কান্তি দাস তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে হত্যাসহ একাধিক মামলার পাঁচটিতে মানিককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি তাকে ঢাকার আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন— তার অণ্ডকোষ ফেটে গেছে !
গত ২৩ আগস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ২৪ আগস্ট সিলেট আদালতে ঢোকার সময় আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষুব্ধ জনতা শামসুদ্দিন মানিককে আঘাত করেন। অনেকে তার দিকে ডিম নিক্ষেপ করেন। আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শরীরে অস্ত্রোপচার হয়।
গত ১২ সেপ্টেম্বর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে মানিককে ছাড়পত্র দেয় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে ওই দিন দুপুরে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কড়া নিরাপত্তা ও সতর্কতার সঙ্গে হাসপাতাল থেকে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।